” না পাঠানো চিঠি”
আইরিন আক্তারপ্রিয় মেঘ,
বরাবরের মতোই ভালো আছো নিশ্চই।
আমিও বেশ আছি। কতকাল চিঠি লেখা হয়না তোমাকে। প্রায়শই ভাবি তোমাকে একটা চিঠি লিখি, আর পাঠিয়ে দিই।
মনের অব্যক্ত কথা গুলো খুব ঘটা করে বলবো, শোনাবো। হয়তো সেই সময়টুকুও হয়ে ওঠেনা তোমার, নয়তো দুজনের। কিছু কথা মুখে না বলে চিঠিতে দিলেই ভালো হয়।
মেঘ, তোমার কি মনে আছে, একদিন তোমাকে রান্না করে খাওয়াবো বলে কতোই না আয়োজন করেছিলাম। তুমি আসবে বলেও আসোনি। একদিন বলেছিলে, “শাড়ি পড়ে তৈরি থেকো আজ তোমাকে জোছনার আলোতে দেখবো”। শাড়ি, চুড়ি, লালটিপ কতো কিছুই না পড়েছিলাম সেদিন, তুমি সেদিনও আসোনি। কিঞ্চিৎ পরিমাণ অভিমানও করেছিলাম। তুমি কতোই না অবুঝ ছিলে, অভিমানে ভরা রক্তচক্ষুর ভাষাটুকুও বুঝতে পারতে না তখন। তবে এখন বেশ ভালো বুঝো।
আমি কখনোই চাইনি ভুলে যাও। ভালোবাসা নাইবা থাকুক আমাদের মাঝে, তবুও তুমি পাশে থাকো এটুকুই তো চাওয়া ছিলো আমার। বলতে,”ভালোবাসি অনেক বেশি”, তোমার সেই কথার প্রতিধ্বনি গুলো এখনো কানে বাজে। আমি মুগ্ধ হয়ে শুনতাম, তুমি বলতে, “যদি সম্ভব হতো তোমাকে নিয়ে চাঁদে পাড়ি জমাতাম”। আরও বলতে আমি নাকি তোমার অভাবী সংসারের আলুভর্তা। আমি হেসে বলতাম কি বাজে বকছো তুমি। সেদিন হয়তো তোমার অভাবী সংসারের আলুভর্তা বলার মূল্যটা বুঝতে পারিনি,তবে এখন বুঝি।
জানো মেঘ, আমি এখন আর আকাশের চাঁদ দেখতে পারিনা, কারণ ওই চাঁদ আমাকে তোমার ছায়ায় পৌছে দেয়।তুমিতো অন্য কারো আলোকিত গল্প হয়ে গেছো, আমি এখনো আধারেই পড়ে রয়েছি। তুমি ঠিকই বলেছিলে,আমি মোহদাসীও বটে। তোমার স্মৃতি গুলো জেকিয়ে ধরে আজ অব্ধি বেঁচে আছি।
আর তো কিছুদিন………….
সে ক’টা দিনও না হয় তোমার স্মৃতিতেই বাঁচিয়ে রেখো। ঔষুধের সাথে ভয়ানক শত্রুতা ছিলো, তবে আজকাল বেশ সখ্যতা হয়ে উঠেছে আমার। সূঁচের নোখ গুলো এখন আর শিরায় আঘাত করতে পারেনা,
হৃদয়ের আঘাতের কাছে এই ব্যথা গুলোকে পিঁপড়ের কামড়ের মতো মনে হয়। একদিন তোমার ডায়েরীতে লেখা “না বলা ভালোবাসা” নামক কবিতাটি চুপিচুপি পড়ছিলাম বলে খুব রাগ করেছিলে,
আজ আমার ডায়েরীর প্রতিটি পাতায় পাতায় তুমি মিশে আছো।
না পাঠানো চিঠি হয়ে আছো ডায়েরীর ভাঁজে, তবে আমার বিশ্বাস একদিন ঠিকই তুমি এই চিঠি গুলো পড়বে। মনে রেখো, আমার সবটুকু জীবন তুমিময় ছিলো, তুমিময়ই থাকবে। ভালো থেকো প্রিয়, অনেক অনেক ভালো থেকো।
ইতি
তোমার, মেঘে ঢাকা চাঁদ….
"রঞ্জিনীকে লেখা আমার চিঠি"
-শ্রীজাত।
.
রঞ্জু সোনা,
তোমার ই-মেল পড়ি না আর। এই অসীমে
হপ্তা পিছু দশ টাকা যায় ট্যাঁক থেকে
ইংলিশ বাদ। বাংলা চালু। শহরে সব রাস্তা ঢালু
গড়াই, আবার ফিরেও আসি এক ঠেকে।
.
আকাশ ভরা সূর্য তারা, হাওয়ায় তখন কী আস্কারা
বুঝিনি, তাও এগিয়ে গেছি চোখ বুঁজে
ঠেকতে ঠেকতে এখন জানি, দুধ কা দুধ-- পানি কা পানি
জীবনে সব স্টেপ নিতে হয় লোক বুঝে।
.
কে কোন চুলোয় ঘাপটি মেরে কার কফিনে ঠুকছে পেরেক
কে কার ঘাড়ে নল রেখেছে বন্দুকের....
তবু তো প্রেম সর্বনাশী, পুজোর চাঁদা তুলতে আসি
সাহস পেতে সঙ্গে রাখি বন্ধুকে।
.
অসীম কালের যে-হিল্লোলে তোমার বাবা দরজা খোলে
দেখেই আমার প্রাণ উবে যায়,রঞ্জিনী
বিকেল করে ঘুরতে বেরোই,স্টিমার চেপে গঙ্গা পেরোই
আমি... তুমি... দাশকেবিন আর মঞ্জিনিস।
.
বেকার ছেলে প্রেম করে আর পদ্য লেখে হাজার হাজার
এমন প্রবাদ হেব্বি প্রাচীন অরণ্যে
কিন্ত তার আড়ালের খবর? জবরদখল? দখলজবর?
হাজারবার মরার আগে মরণ নেই।
.
কান পেতেছি চোখ মেলেছি যা দেখেছি চমকে গেছি
থমকে পাড়ার মোড়ে রাতদুপুর
ঝাপটাতে ঝাপটাতে ডানা পাখি পায় দৈনিক চারানা
কাপড় কিনলে হয় না মুখের ভাতটুকু।
.
প্রাতঃকৃত্য করছি বসে, এই সময় কে জমিয়ে কষে
লাথ ঝেড়েছে কাজলকালো পশ্চাতে
একেই দু- দিন হয় না, শক্ত, তার ওপরে চোটের রক্ত--
খুব লেগেছে। কিন্তু আমি, বস, তাতে
রাগ করিনি। ক্ষমাই ধর্ম শঙ্খ ঘোষের 'কবির বর্ম'।
গায়ে চাপিয়ে ঘুরে মরছি কলকাতায়
ভিড়ের মধ্যে ধাক্কা খাচ্ছি ....হাত- পা দিয়ে ঘুম তাড়াচ্ছি...
বেঁচে ফিরছি, সেটাই তো আসল কথা।
.
টাকা খুঁজছি নোংরা হাতে, ঠান্ডাঘরে, কারখানাতে
তুমি হতাশ,আমিও শালা বিরক্ত
দেয়াল দেখে খিস্তি করি... কোলবালিশ জড়িয়ে ধরি.....
কান্না আসে। এ কোনদেশি বীরত্ব?
.
বাড়ির লোকের উত্তেজনা-- 'কেন কিছু একটা করছ না'?
যেন আজো বেকার আছি শখ করে।
তবু এমন দেশপ্রেম,যে এমপ্লয়মেন্ট- এক্সচেঞ্জে
নাম লিখেছি সোনাবরণ অক্ষরে।
.
তুমি বরং সেটল করো-- গঙ্গারামকে পাত্র ধরো
ফরেন কাটো। দুঃখ পাব, সামান্যই....
আমায় নিয়ে খেলছে সবাই, সুযোগ পেলেই মুরগি জবাই
তুমি তোমার। আমি তো আর আমার নই।
.
ঢপের আকাশ,সূর্য, তারা.... স্বপ্নগুলো বাস্তুহারা
এবার থেকে নৌকো বুঝে পাল তুলো
আজ এটুকুই। সামলে থেকো, আমায় ছাড়াই বাঁচতে শেখো-
আদর নিও--
.
ইতি
তোমার,
ফালতু লোক।।।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সংগৃহিত
১৬/০১/২০
মিরপুর, ঢাকা।
প্রিয় সৌমেন/চৈতালি,
ঠিক কতদিন আগে শেষ চিঠি পেয়েছি বা লিখেছি, মনে করতে পারিনা। কলকাতা আমাদের স্বপ্নের শহর। সেখানে থাকবো, ঘুরবো- এ সাধ প্রাণের গভীরে লালিত, বুহুদিন ধরে। কিন্তু আত্মীয়-পরিজনহীন সেই শহরে এমন অভ্যর্থনা, আতিথেয়তা সে ছিল আশাতীত। আমরা অভিভূত, বহুকাল পর! বলছি এ জন্য যে, ব্যস্ততা শুধু ক্রমবর্ধমান হারে বেড়ে যাচ্ছে এমন নয়, সমহারে কমিয়েও দিচ্ছে আমাদের আন্তরিকতা একের প্রতি অন্যের, প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে। সচরাচর চারপাশে যে উচ্ছ্বসিত আন্তরিকতা আমরা দেখতে পাই, তা যেন স্বাভাবিক নয়, তার আড়ালে থাকে অজস্র প্রত্যাশা, দিতে যেটুকু চাই, পেতে চাই তার ঢের বেশি। আপনাদের কাছে যা পেয়েছি তা আশাতীত।
অলোকদা, বলাকাদী, সৃজিতা যাঁদের সাথে দেখা হয়নি কোনদিন, তাঁদের কাছেও যে ভীষণ রকমের আন্তরিকতা পেয়েছি তা অভাবনীয়। আমাদের সকলের অংশগ্রহনে সেই সন্ধ্যা অ’মলিন হয়ে থাকবে, যতদিন বাঁচি।
বোনটির নাম ভুলে গেছি। হয়তোবা তাঁর আন্তরিকতা আর আতিথেয়তায় ঢাকা পড়েছে নাম, সাময়িক। মাসিমা’র পরিণত হাস্যজ্জল মুখশ্রী ভুলবার নয় কোনদিন।
সময় সল্পতায় দেখা হয়নি তবুও টেলিফোনে সেই আন্তরিক আহ্বান কাকা আর কাকিমার! সে শুধু অন্তঃস্থল হতেই সম্ভব।
আবারও ফিরে যাবার বাসনা লালন করছি মনের গভীরে। প্রাণের গভীর থেকে শুভকামনা সকলের জন্য।
ইতি।
আপনাদের গুণমুগ্ধ
আমিনুর
কুর্চিকে লেখা পৃথুদার চিঠি — বুদ্ধদেব গুহ
কুর্চি
তোমার চিঠি হঠাৎ এই শীতের সকালে এক রাশ উষ্ণতা বয়ে আনলো। পাতা ঝরে যাচ্ছে সামনের শালবনে, বিবাগী হচ্ছে ভোগী । রিক্ততার দিন আসছে সামনে। এরই মধ্যে তোমার চিঠি যৌবনের ধুতির মত এলো এক ঝাঁক টিয়ার উল্লাসিত সমস্ত সবুজ চিৎকারের মত। তার মানে এই নয় যে- তোমার চিঠি দুর্বোধ্য। উপমার খুত ক্ষমা করে দিও। কেমন আছ তুমি? জানতে চাইলেও জানতে পাই কই?
সকাল থেকেই তোমাকে আজ খুব সুন্দর একটা চিঠি লিখতে ইচ্ছে করছিল। ঘুম ভাঙ্গার পর থেকেই তোমার কথা মনে পড়ছিল খুবই। আজকে ঘুম ভাঙ্গলো বড় এক চমকে। এক জোড়া পাখির ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো। যে পাখিদের ডাক বড় একটা শুনিনি এদিকে। কম্বল ছেড়ে দৌড়ে বাইরে গিয়ে দেখি- এক জোড়া স্কারলেট মিনি-ভেট এসে বসেছে আম গাছের মাথায়।আমার ঘুম ভাঙ্গানিয়া পাখিরা- আহা রোজই যদি আসতো। আর তারপরই তোমার এই চিঠি। দিন আজকে ভালো যাবে আমার।
বলছিলাম যে, সকাল থেকেই তোমাকে সুন্দর একটি চিঠি লিখবো ভাবছিলাম। কিন্তু সুন্দর সুখের যা কিছু ইচ্ছা তা দমন করার মধ্যেও বোধহয় এক ধরনের গভীরতর সুখ নিহিত থাকে। থাকে না? আজ চিঠি লিখবোনা তোমাকে, তার বদলে একটি স্বপ্নহার পাঠাচ্ছি, লেখক , কবি না তবুও তার নাম গোপন থাক। কি যে দেখেছিলাম তোমার ঐ মুখটিতে কুরচি। এত যুগ ধরে কত মুখইতো দেখলো এই পোড়া চোখ দু’টি। কিন্তু, কিন্তু এমন করে আর কোনো মুখ’এইতো আমার সর্বস্বকে চুম্বকের মত আকর্ষণ করেনি। ভালো না বাসলেই ভালো…… বড় কষ্ট ভালোবাসায়।
ভালোবাসাতো কাউকে পরিকল্পনা করে বাসা যায় না। ভালোবাসা হয়ে যায়, ঘটে যায়। এই ঘটনার ঘটার অনেক আগের থেকেই মনের মধ্যে প্রেম পোকা কুড়তে থাকে। তারপর হঠাত’ই এক সকালে এই দুঃখ সুখের ব্যাধি দূরারোগ্য ক্যান্সারের মতই ধরা পড়ে। তখন আর কিছুই করার থাকে না। অমোঘ পরিণতির জন্যে অশেষ যন্ত্রনার সংগে শুধু নীরব অপেক্ষা তখন। কেউ যেনো কাউকে ভালো না বাসে। জীবনের সব প্রাপ্তিকে এ যে অপ্রাপ্তিতেই গড়িয়ে দেয়। তার সব কিছুই হঠাৎ মূল্যহীন হয়ে পরে। …। তখন আর কিছুই করার থাকে না। অমোঘ পরিণতির জন্যে অশেষ যন্ত্রণার সংগে শুধু নীরব অপেক্ষা তখন। কেউ যেনো কাউকে ভালো না বাসে। জীবনের সব প্রাপ্তিকে এ যে অপ্রাপ্তিতেই গড়িয়ে দেয়। তার সব কিছুই হঠাৎ মূল্যহীন হয়ে পরে। হুস থাকলে এমন মূর্খ্যামী কেউ কি করে, বলো? সে জন্যে বোধহয়, হুসের মানুষদের কপালে ভালোবাসা জোটে না। যারা হারাবার ভয় করে না কিছুতেই, একমাত্র তাঁরাই ভালোবেসে সব হারাতে পারে। অথবা অন্যদিক দিয়ে দেখলে মনে হয়, যাকিছুই সে পেয়েছিলো বা তাঁর ছিলো, সেই সমস্ত কিছুকেই অর্থবাহী করে তোলে ভালোবাসা। যে ভালোবাসেনি তাঁর জীবন বৃথা। তবুও বড় কষ্ট ভালোবাসায়। এমন মহা বোধ আর কি আছে?
স্বপ্নহার,
তোমায় পাঠাই….
নীল নদীটির নিবিড় পাড়ে,
ঘুম পাওয়া রোদ চমকে চেয়ে অলস পায়ে,
যখন হাটে মাঘী মাঠের ন্যবা ধরা শুন্যতাতে
ঠিক তখনই আমার বুকের গভীর থেকে
স্বপ্নগুলো ঝাপটে ডানা
অস্ফুটে কি কইতে কইতে নড়েচড়ে!
….
স্বপ্নগুলো খুব ভীতু হয়,
আমার স্বপ্ন; সবার স্বপ্ন।
তবুও আমি স্বপ্ন দেখি
রুপের রাজা, গুনের গুনীন,
মুঠির মাঝে মুক্ত মলিন,
সব পাখিদের মুগ্ধ করা মন্ত্র নিয়ে
আসবো ফিরে বারে বারে।
আমার কিছু স্বপ্ন ছিল। স্বপ্ন নিয়ে মালা গাঁথি
স্বপ্ন মালা।
ছিপছিপে সেই মেয়ে, ছিপছিপে সে।
শ্যামলা বরণ প্যাঁচ গুছি শাড়ি
তার স্বপন পুরে বাড়ি, আমার সংগে আড়ি।
স্বপ্নে দেখা নারী, প্যাঁচ গুছি শাড়ির আঁচল
ঠোটের কনে তিল, স্বপ্ন মালায় গেঁথে গেল
হরিণ চিতা চিল।
স্বপ্নে আমি ভেবেছিলাম অনেক কিছুই-
ভেবেছিলাম এটা করবো, সেটা করবো।
বাড়ি করবো, পাহাড় চুড়ায় স্বপ্ন এবং সুখের কুটো দিয়ে।
পায়ের কাছে বইবে নদী নারীর মত, সাধের নারী
বাধ্যতা আর নাব্যতা’তে নীল।
স্বপ্ন উড়ে স্বপ্ন উড়ে বারে বারে।
কুর্চি, দেখি কি করতে পারি? তোমার সাথে বেড়াতে যাবার। ইচ্ছে তো কত কিছুই করে। এই জীবনে ক’টি ইচ্ছে পুণ্য হয় বলো? কারই’বা হয়? এমনিতে আমার অনেক কষ্ট। এমন করে ডাক পাঠিয়ে আর কষ্ট বাড়িও না। একা একা মজা করতেও বিবেকে লাগে। যার বিবেক বেঁচে থাকে, তার সুখ মরে যায়। সুখী হবার সহজ উপায় বিবেকহীন হওয়া। বিবেক বিবশ হলেই বাঁচি।
ভালো থেকো
তোমার পৃথুদা
(মাধুকরী উপন্যাস থেকে সংকলিত)
চিঠি
ফয়সাল
প্রিয়তম মননের মায়াবতি,
যখনি মনের মাঝে নদীর স্রোতের প্রবাহ প্রকট হয়, তুমি যেন পূর্ণিমার আলো হয়ে জোয়ার-ভাটা সৃষ্টি করার সর্বোচ্চ কাজটাই করো তখন। আজো হয়তো তেমনি এক লগ্নে তোমায় আবার বারবার করে মনে পড়ছে আমার। আচ্ছা, তোমারো কি এমনি করে আমায় মনে পড়ে? আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে, আগের মতো এখনো কি মাঝেই মাঝেই তোমার মন খারাপ হয়? প্রকৃতির সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়ে তোমার কি আজো হারিয়ে যেতে ইচ্ছে হয়, প্রকৃতিরি বুকে? এখনো মাঝে মাঝে কি জানালার পাশে উদাস হয়ে বসে থাকো?
আচ্ছা, তোমার জানালার ধারে গাছের ডালে বসে ঘুমানো সেই পাখিটা কি আজো আছে সেখানে? সে কি এখনো ডানার মাঝে মুখ লুকিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে? তুমি কি এখনো মায়া ভরা চোঁখ নিয়ে তার ঘুমের মাঝে সৌন্দর্য্য খুঁজে পাও? তোমার কি মনে পড়ে, আমি তোমাকে বলেছিলাম পাখিটার জোড়াটা কে খুজে বের করার জন্যে? তুমি তখনি চেষ্টা করেছিলে, কিন্তু পাওনি। আজো কি মাঝে মাঝেই সেই জোড়াটাকে খুজতে ইচ্ছে হয়?
হয়তো হয়, হয়তো হয়না অথবা হোক এটা তুমি আজ আর চাওনা। আমিই বা কেমন করে তোমায় আজো আগের মত তেমন করে ভাবি, যেমন করে ভালবেসে ফুলটা দেখি, চাঁদটা খুজি অথবা মাতাল হাওয়ায় ভালবাসার গল্পবুনি। তুমি হয়তো তেমনটি নেই, যেমন ছিলে একটা সময়। আমিও যে তার জন্যে খুব হতাশ, বিশ্বাস কর তা কিন্তু নয়! আমি বরং বিশ্বাস পেয়েছি, কোন কিছু দূরে চলে না গেলে তা কতখানি কাছে ছিলো তা কখনো জানাই হয়না। তেমনি করে তোমাকে আরো অধিক পেয়েছি যেন আমার প্রতিটি ভাবনায়। পেয়েছি বলছি কেন, পাচ্ছিইতো। অনবরত আমায় আমার মাঝের তুমিকে জানান দিচ্ছো তুমি। বাহ, চমৎকার পারোতো! কেমন করে যত্নকরে আমায় এত কষ্টে রাখো?
প্রিয়মুগ্ধ, তোমায় আমি যেমন করে সহজভাবে মনের কথা বলতে পারি তেমন করে আর কাউকে নয় কেন? সেটাই আমার বড় ভাবনা। পথ চলি, কাব্যকথার ঝোলা খুলি, কথার পিঠে কথা বলি। তবু মনেহয়, সে কথাগুলো আর বলা হবেনা যে কথাগুলো বলা হয়ে গেছে। নতুন কথা আর কি নিয়ে হয়, প্রেমের জন্যে প্রেমইতো চাই নাকি? চঞ্চল মন কাউকে চুপ করিয়ে জমানো আসরে বসিয়ে রাখার চেয়ে বড় শাস্তি আর কি হতে পারে, বল? ভয়ানক ক্ষুধার্ত একজন মানুষ খাবার সামনে পরিবেশিত দেখেও যদি তা গ্রহন করতে সংকোচ বোধ করে, তবে তার মনের জাতটাকে তুমি কোথায় ফেলবে? স্বস্তি না পেলে কি শ্রান্তি লাভের যৌক্তিকতা আছে বল?
ভালবাসলে নাকি নারীরা হয়ে যায় নরম নদী, পুরুষরা হয়ে যায় জ্বলন্ত কাঠ। আমি হয়তো জ্বলা-পোড়া ক্ষেপা কাঠই ছিলাম, না হয় ভালবাসা প্রাপ্তির জেদ আমায় ধরেই বসেছিলো। ধরেনিলাম, ক্ষেপা জ্বলন্ত আগুনে কেউ নাহয় তখন আরেকটূ কেরসিনের ঝাপটা দিয়ে গেছে। যার ফলে হয়তো, পোড়া কাঠটাও ধপ করে আবার জ্বলে উঠলো। এই মায়ারাণী, তুমি কি জনতেনা যে ক্ষেপা মানুষকে কিভাবে শান্ত করা যায়? তোমার মাঝে কি নরম জল ছিলো না? তুমি কি ভালবেসে নরম নদী হওনি? তবে কেন তোমার মায়ার জলে ভাসালেনা আমায়?
ক্ষেপা কাঠ, কেরোসিনের প্রকোপে অস্থির হয়ে জ্বলতে জ্বলতে দেখে সে আবার শুকনো কাঠটাই আছে। কেরোসিন তার ভেতরে আসেনি, তার আগুনটাকে বাড়িয়েছে মাত্র…
জানো মায়াবতি, মাঝে মাঝে একা হয়ে গেলে আমি পাগল বুনে যাই! সব আজব সত্য দার্শনিক তত্বগুলো আমার মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। মাঝে মাঝে নিজেকেই নিজে বকাবকি করি, এমন অপ্রিয় সত্যগুলো সমাজে প্রকাশ করে দেয়া মানেই মানবের চরিত্র হননের সমতুল্য। গতকয়দিন আগে এক ভাবনা এলো মনে, দেখলাম পৃথিবীতে প্রেম-ভালবাসা বলতে নর-নারীর জন্যে কিচ্ছু নেই সবই কথা-গান-কাব্য কিংবা সাহিত্যের ফুলঝুড়ি মাত্র। আসল প্রেমটা হল……. আচ্ছা, থাক অনেক নিষ্ঠুর রকমের কথা বলা হয়ে যাচ্ছে। আমি কোন নিষ্ঠুরতার মাঝে নেই, কথা-গান-কাব্য কিংবা সাহিত্যের প্রেমটাই আমি তোমা হতে চাই। সত্যিও যদি না ভালবাসতে পারো, তবে করুনা করে একখানা পত্রোত্তর দিও। তোমার মায়া নদীর শীতল জলে মনের জ্বালাগুলো আমি মেটাতে চাই। যদি ভালবাসা পাই, আবার শুধরে নেবো জীবনের ভূলগুলি…
দহনযোগ্য আগুনের শেষ কাঠ
তোমার কবি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সংগৃহিত
বধুর জন্য
প্রিয়তম প্রেয়সী আমার,
তোমাকে কতটুকু ভালোবাসি এটা জানার কৌশল হিসেবেই তুমি আমার কাছে একখানি চিঠি চেয়ে বসলে কি-না আমি জানি না, তবে আমি এতটুকু জানি তুমি ঠিক হাতিয়ারটিই ব্যবহার করেছো। চিঠি এমন একটি উপায়, যেখানে ভেতরের কথাগুলো আর ভেতরের থাকে না, প্রতিটি অক্ষর প্রকাশ করে দেয় হৃদয়ের রূপকে। তোমায় লেখা এটিই বোধহয় আমার প্রথম পত্র, কেবল পত্র বলছি কেন? অবশ্যই প্রেমপত্র লিখছি।☺️
প্রিয়তম বধু আমার, আমি তোমাকে অতীতে কতটুকু ভালোবেসেছি আমি জানি না। তবে এতটুকু জানি, যতটুকু বেসেছি আমার সামর্থের অতি অল্পই তা! এর চেয়ে অনেক বেশিগুণ তীক্ষ্ণ ও তীব্র প্রেম লালন করি আমি। আমার কোমল প্রেম পাচ্ছো তুমি গত বছর খানেক, জানিনা কতটুকু কোমল উষ্ণতা অনূভব করেছো বা করছো। আর তীব্র প্রেমগুলো অপেক্ষা করছে তোমার সামনের দিনগুলোকে রাঙাতে, হলি খেলতে জানোতো বউ?
তুমিতো জানো, আমি আমার আপন স্বভাবে চলি। প্রশ্ন করতেই পারো- বিয়ের বয়স প্রায় পাঁচ পেরোয়, এখনো নাকি আসল প্রেমের সূত্রপাতই হয়নি! তাহলে এতদিন তুমি পেয়েছোটা কি?
ঠকেছো হয়তো!
আরে আরে এতো সিরিয়াস হওয়ার কিছু নাই!! এতদিনে আমার আদর্শগুলোতো বুঝেছো? সেই ভালো, এবার আমার আসল প্রেমের রূপটাকে বুঝবে, খারাপ কি? জানোইতো আমি সাধারনত্বকে ধারন করি না, হয় অসাধারন কিছু পাবে নয়তো অতি সাধারন কিছু, তবু সাধারনের মত নয়। নিকট ভবিষ্যতে কি পাবে এটা নিয়ে যদি এখনি তোমার মধ্যে টেনশন কাজ করা শুরু করে, তবে তোমাকে শিতল কিংবা আশাবাদী হওয়ার মত একটা জবাব দিচ্ছি- এতদিন তুমি কিছুই পাওনি!
প্রিয় অর্ধাঙ্গী আমার, তুমি দিনে দিনে আরো পরিপক্ক বধু হয়ে উঠছো। সংসার করছো, এমন গোঁয়ার স্বামী এবং ডায়নামিক সংসার সামলাচ্ছো। তুমি আসলেই পরিনিতা হয়ে গেছো? তুমি কি শরৎ বাবুর গল্পের পরিনিতা না তার চেয়েও ডের জীবন্ত আমার অর্ধাঙ্গী পরিনিতা?
তুমি নিশ্চয় জানো, আমি ঠোঁট কাঁটা মানুষ। এই পৃথিবীতে আমি সবচেয়ে বেশি কাকে বিশ্বাস করি জানো? আমার নিজেকে! আর আমিই তোমাকে বলছি- আমি তোমাকে অত্যন্ত বেশি ভালোবাসি, অনেক অনেক বেশি। যা আগের তোমার চেয়ে কয়েক কোটি গুণ বেশি!
অতি প্রকাশ প্রেমের মূল্যবোধ নষ্টকরে, এর চেয়ে বেশি প্রকাশ করা যৌক্তিক মনে করছি না। আশির্বাদ করি আমৃত্যু আমার বামবুক শুধুমাত্র এবং কেবলমাত্র তোমার জন্যই যেন থাকে, পৃথিবীর সমস্ত সুগন্ধি ফুলের সমাবেশ যে বাগানে হয় সে বাগানেই সৃষ্টিকর্তা যেন তোমার আমার শেষ জীবন দান করেন। তুমি অনিন্দ্য সুন্দরী হয়ে উঠো আমার
জীবনের প্রতিটি সকালে।
ইতি— তোমার একমাত্র প্রেমিক পুরুষ।
কাজী রাহনুমা নূর
চিঠি****
বহুদিন পর আবারো লিখতে বসলাম। ঘুম আসছে না। এইতো কবছর আগেও ঘুমহীন রাত মানেই, তুমি ছিলে। চাপা গলায় ফোনে ফিসফাস, রাগ অভিমান, মা বাবা জানলে কি কি হতে পারে এসব নানান ভাবনায় ঘুম যে কোথায় পালাতো। অথচ সকালে নির্ঘুম রাতের কোন ক্লান্তি চেপে ধরতো না। তোমায় কল্পনায় ছুঁয়ে থাকার মাঝেই কি এক অদ্ভূত বিশ্রাম ছিলো। মুখ ধুতে গিয়ে আয়নায় তাকিয়ে দেখতাম ওখানে তুমি, মিটিমিটি হাসছো। রুটির প্লেটে আলু ভাজা গুলোর পাশেও তুমি, আদর করে আমায় খাইয়ে দিচ্ছো, চুল আঁচড়ানোর চিরুনীটার প্রতি দাঁতে ও তুমি, জট লাগানো চুল গুলো নিবিড় মমতায় খুলে দিচ্ছো। তুমি ছিলে আমার পুরো ঘর জুড়ে। পড়ার টেবিলে, পর্দার ঝুলে, সিলিং ফ্যানের ঘুর্ণিতে এমন কি আমার বইয়ের প্রতি পাতা জুড়ে। কিন্তু অন্য শহরে থাকা এই তুমি টা যখন সামনে এসে দাঁড়াতে তখন তোমার চোখে চোখ রাখা কি যে কঠিন পরীক্ষা ছিলো। পৃথিবীর সব লজ্জা আমার চোখের পাপড়ি, কানের দুল আর ঠোঁটের কিনারটা ধরে দোল খেতো। এত এতদিন যে দিনটার অপেক্ষায় ছিলাম সে দিন টি, সেই মূহুর্তটি তেই কেন যে অমন উদ্ভট আচরণ করতাম আমি? তা ভেবে আজো কষ্ট পাই খুব।
মনে পড়ে, শেষ জন্মদিনে তুমি তেরোটা লাল গোলাপ নিয়ে হাজির হয়েছিলে কলেজের গেইটে। সে গোলাপ হাতে নিয়ে আমি দিশেহারা , বুঝছিলাম না কাকে লুকাই, তোমাকে না আমার হাতে ধরে থাকা লাল গোলাপ গুলোকে। সারা শরীর জুড়ে তখন হাজার পাখির কিচির মিচির, বুক ঢিপ ঢিপ, গলা শুকিয়ে কাঠ ।
এখন প্রায় ভাবি তুমি কেন সে বছর ঠিক তেরো টা গোলাপ দিয়েছিলে? তুমি কি জানতে নভেম্বরের তেরোতে আমি অন্য কারো হয়ে যাবো? তুমি কি জানতে সেই তেরোটা গোলাপ, তুমি হয়ে সারাজীবন আমার কবিতার বইয়ের পাতায় লেপ্টে থাকবে?
দুজন দুজন কে না পেলে বাঁচব না এমন টাই তো ভাবতাম। অথচ দেখো এই আমি, সংসার গুছিয়ে চুল বাঁধি, পরম মমতায় প্রিয় কারো পাতে ভাত তুলে দিই। কাছের মানুষদের অমঙ্গল চিন্তায় কেঁপে কেঁপে উঠি।
তবে খোঁপায় কারো নামে আর বেলী ফুলের মালা জড়ানো হয় না, অকারণে মায়ের সাথে মিথ্যে বলা হয় না। আয়নায় তাকিয়ে আধ পাকা চুলের হেরে যাওয়া এই আমিকে ই দেখি কেবল, সেখানে তুমি নেই, নেই সেই মিটমিটে হাসি।
রাত তিনটা বাজে। আজ কতদিন পর তোমায় ভেবে রাত জাগা, তোমায় ভেবে এলোমেলো লেখালেখি, তোমায় ভেবে মরু চোখটায় অসময়ের বন্যা।
কোথায় আছো তুমি?
কোন নির্ঘুম রাতে মনে পড়ে আমায়?
পড়ে মনে?
তোমার রোদ্দুর
++++রাহনুমা
একটি চিঠি (কবিগুরুকে লেখা “খোলা চিঠি”)
আমি যাইনি শেলী, কিটস্’দের দলে । আমার নাটকের ঘাত প্রতিঘাত তুমি, প্রেমের আলিঙ্গনে তুমি, বিরহের মাধূর্যে তুমি ।
‘আমার মল্লিকা বনে যখন প্রথম ধরেছে কলি / তোমার লাগিয়া তখনি বন্ধু, বেঁধেছিনু অঞ্জলি ।’
ওগো প্রেমিক,ওগো চির বসন্ত,বাকি আমি রাখব না কিছুই – তোমার চলার পথে পথ ছেয়ে দেব ভুঁই’’।
‘মম দুঃখের সাধন যবে করিনু নিবেদন তব চরণ তলে শুভ লগন গেল চলে,’… ।
‘বাণী মোর নাহি,স্তব্ধ হৃদয় বিছায়ে চাহিতে শুধু জানি ’।
মহাভারত সম তোমার রচনাবলী আমার হাতে দিয়ে গেলে , সময় কোথায় যে স্মরন মনন করবো, আমি যে বাঁচার লড়াইয়ে হাতিয়ারহীন সৈনিক ।
মধ্যদিনের সূর্য গন গন করছে , একা আমি…তৃষ্ণার শ্রান্তি তুমি…হাত ধরে এগিয়ে নিয়ে চল…গোধুলির দিকে ।
আমরা আবার গান গাইসেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে ফুল ডোরে বাঁধা ঝুলনা
তোমার পায়ে সহস্র শুভ্র কুসুম নিবেদনের সাথে সহস্র প্রনামান্তে
ফারহানা নীলা
শুভঙ্কর,
তোর মনের ঠিক কোন কোণাটায় আমার বসত! সেটা জানার জন্য আমি কতটা পথ হেঁটে
এসেছি একা! ওখানে সরু পথের দুধারে ঝুলে ঝুলে আছে রক্ত করবী, জারুল, সোনালু,
সোনাইল আর কৃষ্ণচূড়া। সব রঙ একেএকে জড়িয়ে নিজেকে আমার রঙধনু মনে হয়। বিশাল
আকাশে ক্ষণিক রঙের রেখা; রোদ আর জলের আলপনা আঁকা। হঠাৎ মিলিয়ে যায় রঙধনু,
ঠিক যেমনটি আমি হারিয়ে যাই তোর মনের অলিতে গলিতে! আমার তো জানা হলো না
শুভঙ্কর! কোন কোণাটায় আমার বাস।
জানিস শুভঙ্কর আজকাল আমার বড্ড জল হতে মন চায়। কেন বল তো? জলের বহমান ধারায় আমি লিখে
রাখি তোর কথা, আমার কথা, আমাদের কথা। সৈকতে পা ভিজিয়ে আমি জলের কল্লোলে
চিৎকার করে কথা বলি.... না বলা কথাগুলো সাগরের গর্জনে ক্রমশ ফুঁসে ওঠে।
ফুসমন্তরে আমি জল আর আকাশের সঙ্গমস্থলে পৌঁছে যাই। অথবা মরা ইছামতির কানে
কানে বলি একদিন ঢেউ ছিল, জল ছিল, ভাঙনের কান্না ছিল। হয়তো ইতিহাসের বুক
চিড়ে টেনে আনি জলোচ্ছ্বাস ; জীবনের বাকী গল্প! আবার কখনো পাহাড়ের কান্না
ছুঁয়ে ঝর্ণাজলের স্বচ্ছতা নিয়ে টলমল করি!
এমনটাই তো তুই চেয়েছিলি শুভঙ্কর! এটাই তো বোধ করি চেয়েছিলি! নিত্যপূজা আমার জলেই হোক; আরতি আমার জলেই হোক!
আমি বয়ে বেড়াই শ্রাবণ শোক!
জলের কাছে রেখে এলাম আমার ঠিকানা, জলের বুকে এঁকে এলাম আমার গোপন ব্যথা; তোর অজানা!
আজকাল আমি জল হয়ে যাই শুভঙ্কর, আমি জল হয়ে যাই।
জলে কোনো দাগ থাকে না,
জলে কোনো শেকড়ের টান থাকে না।
বহতা জলে কোনো কিছুর ছাপ থাকে না; জলের ধারা নিম্নগামী জেনেছি যখন.... তখন থেকেই আমি জল হয়ে যাই শুভঙ্কর!
জলের নিনাদ, জলেই বিবাদ, জলের কাছেই আমার নিত্যপূরাণ!
জলেই ভাসি, জলেই ডুবি, জলেই কাঁদি; জলের কাছেই আমার বুকভাসান!
জল জল হাহাকারে তবুও আমি প্রদক্ষিণরত তোর চারিপাশে; এত জল ধরেছি এই বুকে,
কত জল রেখেছি এই চোখে.... একবার এসে মেপে যাস শুভঙ্কর! মরবি না তুই, মরবি
না ডুবে.... ডুবোজলে! তবে নোনতা স্বাদে হয়তো তোর বিস্বাদ হতেও পারে!
শুভঙ্কর তোর জন্য আজ আমি কেবলই জল, জল হতে হতে হতে...
থাক নাই বা বলি
এসব! বরঞ্চ আয় জলের বুকে আঁকিবুকি কাটি.... ভয় নেই কোনো দাগ, কোনো ছাপ
থাকবে না ওখানে। পাছে কেউ দেখে ফেলে; ভাবছিস বুঝি! জল তো বয়ে যায়, বেয়ে
যায়.... আমারই মতন, আমারই মতন!
ইতি...
নন্দিনী
#নীল_কথন
১৫/০৭/২০১৯
©ফারহানা নীলা
No comments:
Post a Comment